কুমুদিনী হীন দীঘি
-চিন্ময় মহান্তী
আগোছালো রোদ গায়ে মেখে তুমি যখন স্কুলে যেতে
একটা ছেলে আনমনে অপেক্ষা করতো তিন রাস্তার বাঁকে ।
তুমি যখন ওর সামনাসামনি হতে , ছেলেটা ভাবতো —
আজই বলে দেবে , আজই নিবেদন করবে প্রেম প্রস্তাব ।
কিন্তু না ! কুমুদিনী তুমি চলে যেতে ,
ছেলেটার আর বলা হয়ে উঠতো না । আজ হতো কাল ।
কাল হতো অন্তহীন ঠিক যেমন অনন্তনাগের মাথায় বসুন্ধরা,
ছেলেটার মাথায় তুমিই তখন বসুন্ধরা ।
অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চায় না , সে যেন চির নবীন ;
তারপর পথ শেষে ছেলেটা দাঁড়ায় এসে নীল সাগরের তীরে ।
গোধূলির ধুলো ওড়া প্রহর গায়ে মেখে পাহাড় ডোবে আঁধারে ,
গোলাপের জল গায়ে মেখে তুমি সাজলে কুমকুম আর সিঁদুরে ;
অস্তরাগের সূর্যটা ডুবে যায় শেষ বিকেলের রোদ গায়ে মেখে ।
তুমি বললে -বড্ড দেরি হয়ে গেছে ,
এতো লাজুকতা ছেলেদের মানায় না ।
তাজা গোলাপটা ধীরে ধীরে বিবর্ণ হয় , মন হয় পাললিক শিলা ।
প্রত্নতত্ত্বে যে শিলা শুধুই বিরহ রচনা করে , সাদা পাতার বুকে ।
শরৎ আসে নদীর চরে কাশ ফোটে , পাখির কূজনে ভরে বাগান ,
ছেলেটা তখনও তাকিয়ে দেখে —
কুমুদিনী হীন দীঘির বুকে শ্যাওলা চরে রাশিরাশি ।